অনেক সময় আমাদের বুক ধরফর করে। বুক ধরফর করার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। যে সকল কারণে বুক ধরফর করে সেই কারণ গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হবে। সেইসাথে কিভাবে বুক ধড়ফড় কমানো যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। বুক ধড়ফড় করার ৮টি কারন ও করণীয় দেখে নিন।
উপস্থাপনা
বুক ধরফর করাতে মন গুরুতর কোন সমস্যা না হলেও কখনো কখনো এই সমস্যার কারণে বড় ধরনের কোন দুর্ঘটনার ঘটতে পারে। তাই বুক ধরফর সমস্যাটিকে অবহেলা করা উচিত নয়। বুক ধরফর করার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে এই আর্টিকেলটিতে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হবে। আপনি যদি প্রথম থেকে মনোযোগের সাথে আর্টিকেলটি পড়েন তাহলে বুক ধরফর করার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।
বুক ধড়ফড় করা কোন রোগের লক্ষণ এবং বুক ধড়ফড় দূর করার ঘরোয়া উপায় সমূহ নিচে তুলে ধরা হবে। সেই সাথে নিচে, বুক ধরফর এর ঔষধ সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে। আশা করি নিম্ন বর্ণিত তথ্য গুলো আপনার উপকারে আসবে। বুক ধড়ফড় করার ৮টি কারন ও করণীয় দেখে নিন।
বুক ধড়ফড় করার ৮টি কারন ও করণীয় দেখে নিন
বুক ধড়ফড় করার ৮টি কারন নিচে তুলে ধরা হবে। সাধারণত এই আটটি কারণেই বুক ধড়ফড় সমস্যাটি দেখা দিয়ে থাকে। যদি নিম্ন বর্ণিত আটটি কারণের কোন কারণ আপনার ভিতর দেখা দেয় সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতেই হবে, তো দেরি না করে বুক ধড়ফড় করার ৮টি কারন ও করণীয় দেখে নিন। যদি অত্যাধিক মাত্রায় বুক ধরফরের সমস্যা দেখা দেয় সেক্ষেত্রে ঔষধ সেবন করতে হবে। বুক ধরফর এর ঔষধ সমূহের নাম আর্টিকেলটির শেষ অংশে তুলে ধরা হয়েছে।
অত্যাধিক আবেগতাড়িত হওয়া: যেকোনো কারণবশত যদি আপনি অত্যাধিক পরিমাণে আবেগ তাড়িত হয়ে ওঠেন, সে ক্ষেত্রে আপনার বুক ধরফর করার সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে মানসিক চাপ দুশ্চিন্তা বা ব্যথার কারণে ইমোশনাল পরিবর্তন ঘটলে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
দুশ্চিন্তা করা: বুক ধরফর করার আরেকটি অন্যতম কারণ হলো দুশ্চিন্তা। আপনি যখন অত্যধিক পরিমাণে দুশ্চিন্তা করবেন, তখন আপনার হরমোনাল পরিবর্তন দেখা দিবে। আর এ কারণে বুক ধরফর করার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
দীর্ঘসময়ের ধরে ব্যায়াম করা: দীর্ঘ সময় ধরে ব্যায়াম করলে, শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন ঘটে। এবং দীর্ঘসময় ব্যায়াম করলে অস্থিরতা ভাব কাজ করে। তাই আপনি যদি দীর্ঘ সময় ধরে ব্যায়াম করেন তাহলে হাঁপিয়ে ওঠার কারণে আপনার বুক ধরফর করতে পারে।
ক্যাফেইন বা উত্তেজক দ্রব্যাদির প্রভাব: কেফিন বা উত্তেজক দ্রব্যবাদের প্রভাবেও বুক ধরফর করার সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে ক্যাফিন, নিকোটিন, কোকেন, অ্যাম্ফেটামাইনস এবং সিউডোফেড্রিন যুক্ত ঔষধ সমুহ সেবন করার কারণে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
জ্বরের প্রভাবে: অনেক সময় অত্যাধিক পরিমাণে জ্বরের কারণে বুক ধরফর করার সমস্যা দেখা দেয়।অর্থাৎ জড় যদি অতিরিক্ত মাত্রায় বৃদ্ধি পায় তাহলে বিকারের সম্ভাবনা থাকে। আর বিকারের পাশাপাশি জ্বরের প্রভাবে বুক ধরফর করার সমস্যা দেখা দেয়। অর্থাৎ বুক ধরফর করার সমস্যা দেখা দেয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো: জ্বরের প্রভাব।
হরমোনের পরিবর্তনের কারণে: হরমোনের পরিবর্তনের কারণে, বুক ধরফর করার মত সমস্যা গুলো দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে মাসিক ঋতুস্রাবের সময়,গর্ভধারণ অথবা মেনোপচ হওয়ার সময় বুক ধরফর করার মত সমস্যা দেখা দেয়া অস্বাভাবিক কিছু নয় কেননা এই সময় শারীরিক পরিবর্তনের কারণে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে।
থাইরয়েড হরমোনের কারণে: থাইরয়েড হরমোন এর কারনেও কখনো কখনো বুক ধরফরানের মত সমস্যাগুলো দেখা দেয়। সুতরাং বুক ধরফর বা পালপিটেশন হওয়ার অন্যতম আরেকটি কারণ হলো থাইরয়েড হরমোন।
শারীরিক দুর্বলতা: শরীর যদি অত্যধিক পরিমাণে দুর্বল থাকে সেক্ষেত্রে বুক ধরফরানির সমস্যাগুলো দেখা দেয়। কেননা শরীফ অত্যধিক পরিমাণে দুর্বল থাকলে, এর প্রভাব সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে বিশেষ করে বুক ধরফরানের সমস্যা দেখা দেয়। শরীর দুর্বল থাকলে, শরীরে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি থাকে যার ফলে এই সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে।
বুক ধড়ফড় করা কোন রোগের লক্ষণ
আপনি যদি বুক ধরফর করার সমস্যায় ভোগেন সেক্ষেত্রে নিম্ন বর্ণিত রোগ গুলো আপনাকে আক্রমণ করতে পারে। তাই বুক ধরফর করার মত সমস্যাগুলো দেখা দিলে অবশ্যই আপনাকে সচেতন হতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতেই হবে বুক ধরফর করলে সাধারণত যেই সকল রোগ আক্রমণ করতে পারে সেই রোগ সমূহের তালিকা নিচে তুলে ধরা হলো। সেই সাথে নিচে, বুক ধরফর এর ঔষধ সমূহের নাম তুলে ধরা হবে।
অজ্ঞান হওয়া বা মূর্ছা যাওয়া: অত্যাধিক পরিমাণে বুক ধড়ফড় করার সমস্যা থাকলে মুছে যাওয়া বা অজ্ঞান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই আপনি যদি দেখতে পান যে আপনার এই ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে তাহলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন।
কার্ডিয়াক এরেস্ট: বুক ধরফর করার কারণে আরেকটি সমস্যা দেখা দিতে পারে আর তা হলো কারণে কার্ডিয়াক এরেস্ট। কার্ডিয়াক এরেস্ট খুবই গুরুত্ব আরো একটি সমস্যা। ক্ষেত্রবিশেষে হার্ট এটাকের থেকে কার্ডিয়াক এরেস্ট অধিক গুরুতর হতে পারে।
স্টোক: স্টোকের পূর্ব লক্ষণ হিসেবে অনেক সময় বুক ধরফর করার মতো সমস্যাগুলো দেখা দেয়। তাই মাঝে মাঝেই যদি আপনার বুক ধরফর করার সমস্যা দেখা দেয় সে ক্ষেত্রে অবহেলা না করে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতেই হবে তা না হলে পরবর্তীতে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
হার্ট ফেইলিওর: কখনো কখনো বুক ধরফর করার সমস্যার কারণে হার্ট ফেইলিওরের মত সমস্যা গুলো দেখা দিতে পারে। তাই বড় ধরনের কোন রোগ হওয়ার পূর্বেই আপনার উচিত হবে বুক ধরফর রোগের চিকিৎসা করা। হবে খুব সহজেই আপনি বুক ধরফর করার চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারবেন সে সম্পর্কে নিজে আলোচনা করা হবে।
বুক ধরফর এর ঔষধ
অত্যাধিক পরিমাণে বুক ধরফর করার সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই আপনাকে বুক ধরফর এর ঔষধ সেবন করতে হবে। তবে, বুক ধরফর এর ঔষধ সেবন করার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা ব্যতীত নিজে নিজে কখনোই ফার্মেসী থেকে ঔষধ ক্রয় করে সেবন করবেন না।
ডাক্তার এটা পরামর্শ ব্যতীত নিজে নিজে ঔষধ ক্রয় করে সেবন করলে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য জটিল তাই পড়তে পারেন। তাই সব ধরনের ঝামেলা এড়াতে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শক্রমে নিম্ন বর্ণিত বুক ধরফর এর ঔষধ সমূহ সেবন করা যেতে পারে।
- ব্রোফেক্স সিরাপ
- লিওকফ সিরাপ
- ড্রিকফ সিরাপ
- ডেক্সসোল সিরাপ
- এক্সোফান সিরাপ
শেষ কথা
বুক ধরফর করার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে ইতোমধ্যেই উপরে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হয়েছে সেই সাথে বুক ধরফর দূর করার ঔষধ সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তাই আপনি যদি প্রথম থেকে এই আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই বুক ধরফর করার কারণ প্রতিকার এবং বুক ধরফর এর ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন।